সৌদি আরবে মেসি; নিষিদ্ধ করল পিএসজি

 সৌদি আরবে মেসিনিষিদ্ধ করল পিএসজি


                       ছবি: সংগৃহীত                                                                                                                                                                        

আব্দুল্লাহ শেখ এবং সালাউদ্দিন সাজু, ঢাকা 


সৌদি-আরবের পর্যটনদূত হিসেবে সপরিবারে দেশটিতে সফর করেন, আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসি। সৌদির পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল খতিব নিজস্ব টুইটার থেকে মেসির পুরো পরিবারের ছবি পোস্ট করে নিশ্চিত করেন বিষয়টি। এছাড়া, মেসি তাঁর ব্যক্তিগত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টেও আরবে ঘুরে বেড়ানোর ছবি শেয়ার করেন ভক্ত-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে।

 

                                         টুইটার লিংক: https://rb.gy/dn65s



-নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো সৌদি আরব সফরে গেলেন মেসি। ২০২২ সালের মে মাসে সৌদির সঙ্গে পর্যটনদূত হিসেবে চুক্তি করেন এই তারকা ফুটবলার। সেবছরেই, দেশটিতে প্রথম ভ্রমণ করেন তিনি।


মেসি এবারের সৌদি সফরে যান, লিগ ওয়ানে তাঁর ক্লাব দল প্যারিস সেইন্ট জার্মেই লঁরিয়ার বিপক্ষে - গোলে হেরে যাওয়ার পরেরদিন। সফরে যাওয়ার জন্য মেসি ক্লাবের কাছে ছুটির আবেদন করলেও, ছুটি মঞ্জুর হওয়ার আগেই সফরে যান।

 

দল লিগে হেরে যাওয়ায়, ক্লাব সমর্থকদের রোষানলে থাকার মাঝেই, মেসির সৌদি সফর ভালোভাবে নেয়নি পিএসজি। ক্লাবের অনুমতি না নিয়ে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে সফরে যাওয়ায়, শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে মেসিকে দুই সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফ্রান্সের ক্লাবটি।


                                    টুইটার লিংক: https://rb.gy/b2b5d



মেসিকে নিষেধাজ্ঞার বার্তাটি নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট করে পিএসজি। এসময়, আর্জেন্টাইন এই ফুটবলার, ক্লাবের হয়ে কোনো ম্যাচ বা অনুশীলনে অংশ নিতে পারবেন না। পাবেন না আর্থিক সুবিধাও।


পর্যটনদূত কী? সেজন্য কত টাকা পান মেসি?


যেকোনো দেশে পর্যটকদের ভ্রমণে আকৃষ্ট করতে নির্দিষ্ট রাষ্ট্রটি যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এমনভাবে চুক্তি করে, তাতে সেই ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট রাষ্ট্রটির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য কিংবা ওই রাষ্ট্রের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্য প্রচারণা চালায় সুকৌশলে। এক্ষেত্রে আর্থিক সুবিধা কিংবা অন্য আরও সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করা ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান।


                       ছবি: টুইটার 


মেসি-সৌদি আরব চুক্তিটিও সেরকম। ক্লাবের অনুমতি ছাড়া, দলের অনুশীলনে অনুপস্থিত থেকে অন্য দেশে ভ্রমণে গেলে নিষেধাজ্ঞায় পড়বেন, মেসি এমনটা জানার পরও তাই উপেক্ষা করেছেন সৌদির সঙ্গে তার পর্যটন চুক্তির কারণে।

 

পর্যটনদূত হিসেবে, মেসি সৌদি সরকারের থেকে কত টাকা পান? তা কোনো পক্ষই প্রকাশ করেনি কখনো।

 

ক্লাব সমর্থকদের বিক্ষোভের কবলে মেসি; ছাড়তে বলছেন পিএসজি

 

সাম্প্রতিক সময়ে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগে খারাপ ফর্মের ভেতর দিয়ে যাওয়ায়, পিএসজি সমর্থকরা উত্তপ্ত ছিলেন দলের পারফরম্যান্সে। ঠিক সেই সময়ে, বীনা অনুমতিতে সৌদি সফর করে মেসির নিষেধাজ্ঞার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে প্যারিসের দলটির উগ্র সমর্থকরা।


এই অবস্থায়, ফ্রান্সে অবস্থানরত মেসির বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করে, মেসিকে পিএসজি ছাড়ার হুঙ্কার ছুঁড়েছে দলটির সমর্থকগোষ্ঠী। তাঁরা এসব প্রচারণা চালিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।


                                         টুইটার লিংক: https://rb.gy/b1k16 
  


তবে, দলটির এসব উগ্র সমর্থকদের আচরণে বিরক্ত পিএসজি সামাজিক মাধ্যমে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সেইসঙ্গে, সমর্থকরা তাদের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখলে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার হুশিয়ারিও দিয়েছে দলটি।

 

নিজের ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ মেসির

 

নিজের ক্যারিয়ারে, ক্লাব জাতীয় দল মিলিয়ে এই প্রথম শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে নিষিদ্ধ হয়েছেন মেসি। মেসির মতো বিনয়ী ফুটবলার, ক্লাবের শৃঙ্খলা ভেঙে নিষিদ্ধ হয়েছেন, এটা অনেকের কাছেই ছিল অভাবনীয়।

 

ক্লাবের সমর্থকরা তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করার মাঝেই, মেসি তার চিরাচরিত স্বভাবে, সবকিছুর জন্য নিজের ক্লাব পিএসজি আর সতীর্থদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

 

ব্যক্তিগত ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে এক ভিডিও পোস্ট করে মেসি বলেছেন," ঘটনা শেষ হওয়ার পর আমি এই ভিডিও নির্মাণ করতে চেয়েছি। প্রথমত, আমি সতীর্থদের কাছে ক্ষমা চাইছি। ম্যাচের পর ছুটি থাকবে ভেবে, পূর্বনির্ধারিত এই সফরে যেতে আমি বাধ্য ছিলাম। কারণ, সফরের সবকিছু আগেই ঠিক করা ছিল, আমি বাতিল করতে পারিনি। যা আগেও করেছি।"


                                         টুইটার লিংক: https://rb.gy/c9p38



মেসির এই বিনয়ী স্বভাব পারবে কি পিএসজির উগ্র সমর্থক গোষ্ঠীর আগুন নেভাতে? পারুক বা না পারুক, কিংবা দলের নিষেধাজ্ঞা জুটলেও, মরুর বুকে যে সবুজ প্রকৃতি বিশ্ববাসীকে দেখিয়েছেন মেসি, আখেরে লাভ তো সৌদি আরবের। মেসির মতো বিশ্বখ্যাত তারকা যখন পর্যটক হয়ে কোথাও যায়, তখন সেখানকার পর্যটনশিল্প তো সারা বিশ্বের পর্যটকদের আকর্ষণ করবেই। মেসি 'পর্যটনদূত' এই নির্জলা সত্যই বা কয়জন সাধারণ পর্যটক হিসেবে রাখবে?






Comments